চৈত্রের এই প্রায় শেষদিকের সকালবেলায় শহরের পাখিরাও যখন আড়মোড়ায় ব্যস্ত তখন বেরোতে হয় কর্মস্থলের দিকে। সূর্যের তেজ একটু একটু করে বাড়ছে প্রতিদিন। দক্ষিনের বঙ্গোপসাগর থেকে যে বাতাসটা এসে পৌছয় খুলনা শহরে তার অনুগুলোও বোধকরি রোদের তাপে উষ্ণ হয়েই আসে। রাস্তার কাজ চলছে প্রায় বছরখানেক ধরে। আজ নর্দমার কাজ শেষ হয় তো কাল রাস্তার পিচ খুঁড়ে পাশে চলে যায়।
ছোট একটা বাইকে চড়ে প্রতিদিন কর্মস্থলে যাই। বাসা্র গলি থেকে বেরিয়ে যে প্রধান সড়ক তার ওপারে রায়েরমহল। একসময় গ্রাম ছিল, এখন পুরো শহর। মিনিটখানেক গেলেই একটা মসজিদ পেরিয়েই পড়ে একটা গীর্জা। আমাদের অসভ্য বন্য বর্বর পুর্বপুরুষেরা যে উপাসনালয়ের সাথে পাঠশালার ধারা তৈরী করে গিয়েছিলো তা আমরা উত্তরসুরীরা ব্রান্ড আলাদা করে হলেও বজায় রেখেছি। খুব ধীরে গীর্জাটা পার হই। বেথেলহামের যীশু বাংলার এই প্রান্তে এসেও যে বিমূর্ত তা ছোট ছোট শিশুদের গলায় প্রার্থনা সঙ্গীত যতটুকু শুনতে পাই তাতে অনুভব করি।
সকালে মানুষের চেয়ে সারমেয়দের সাথে দেখা হয় বেশি। রায়েরমহল জামে মসজিদের পাশে যে বৈকালিক অস্থায়ী বাজারটা বসে সেখানে একটা নতুন সারমেয় অতিথি এসেছে। বয়েস মাস দেড়েক হবে হয়তো। যতবারই দেখেছি খেলায় ব্যস্ত। আর কেউ পাশ দিয়ে গেলে একটা আদুরে চাহুনী দিয়ে মৌন বাক্যালাপ। ব্যস্ততা থাকায় সাহেবটার সাথে আলাপ হয়নি।