Saturday, April 25, 2020

প্রতীক্ষা



পৃথিবীটা আজ বড্ড নিশ্চুপ- কোলাহলহীন,
জাগতিক সব ব্যস্ততা আজ অবর্তমান। 
যৌবনের উচ্ছলতা, কৈশোরের চপলতা, চার দেয়ালের মাঝে অন্তরীন।

জীবনের মানে খুঁজতে হয় এখন হৃৎপিন্ডের শব্দে,
বাতাসে ভেসে বেড়ায় অদেখা মৃত্যুদূত।
বাইরে থেকে ফেরা পরিযায়ীর থেকে নিরাপদ দূরত্ব খোঁজে
আপন বলে জানা মানুষগুলো।

ক্ষুধা পেটে হেঁটে আসে লক্ষ মানুষ মৃত্যু-মিছিলে,
হিমঘরে বসে আবেগের খেলনায় চাবি দেয় স্বভাবভূখা-রাক্ষস।
ক্ষুধিতের চাল ঢোকে জাত-তস্করের গুদামে,
খোলা বুকে যুদ্ধে নামে প্রধানের হুমকি খাওয়া সৈনিক।
খোঁয়াড়ে ঢুকতে চায়না অবাঞ্চিত শুয়োরের পাল-
লাঠি হাতে ক্লান্ত হয় উর্দীসমেত রাখাল;
খাজাঞ্চিদারও করে করজোরে মিনতি, ঘরে থাকুন!

সুর্য ওঠে- অস্ত যায় প্রকৃতির নিয়মে;
প্রতিদিন জাদুবাক্সে গল্প শোনায় কানহীন গর্দভ।
দূরে শোনা যায় কান্নার শব্দ, পাখির ডানায় পৌছে যায় মহল্লাগুলোয়।
শব্দ শুনেই লুকিয়ে পড়ে ভিখিরি-নিষ্কম্মার পাল;
পাছে যেতে হয় মুর্দার কাছে! আরেকদল দিন গোনে শীত আসতে কত দেরী!

মানুষগুলো করে অপেক্ষা- 
কবে শেষ হবে এ নির্বাক সন্ধেগুলোর,
আবার প্রাণোচ্ছাসে ভাসবে প্রিয় পৃথিবী,
আবার প্রিয়জনের বুকে মাথা রেখে নেয়া যাবে ভীতিহীন শ্বাস?

নীরবে চলে প্রার্থনা, ক্ষণগণনা আর
প্রতীক্ষা।


ঢাকা
২৪ এপ্রিল, ২০২০
১১ বৈশাখ, ১৪২৭

Thursday, April 16, 2020

হযরত আদমের সুসমাচারের বঙ্গানুবাদ


১ রাতের প্রথম ঘন্টায় খারাপ আত্মারা সদাপ্রভুর প্রশংসা করে, এবং এই সময়ে তারা কোন মানবের ক্ষতি করেনা বা আহত করেনা
২ রাতের দ্বিতীয় ঘন্টায় প্রশংসা করে পায়রাগুলো
৩ তৃতীয় ঘন্টায় প্রশংসা করে মৎস্যকূল, আগুন এবং গভীরস্থ সকল জীব
৪ চতুর্থ ঘন্টায় সেরাফিম দেবদূতেরা 'পবিত্র, পবিত্র, পবিত্র' বলে প্রশংসা করে সদাপ্রভুর; পাপে পড়বার আগে আমি যা শুনে অভ্যস্ত ছিলাম। তাঁদের পাখার আওয়াজ ছাপিয়ে যেত এই প্রশংসাসূচক স্তূতি। কিন্তু, আইন অমান্য করার পর থেকে আমি আর তা শুনতে পাইনা। 
৫ পঞ্চম ঘন্টায় প্রশংসা করে স্বর্গে বয়ে যাওয়া জলধারা। আমি শুনতাম সে জলধারার কলরব দেবদূতদের সাথে (যখন আমি স্বর্গে ছিলাম)। এই তীব্র কলরব দেবদূতদের যেন প্ররোচিত করত সদাপ্রভুর প্রতি আরো বেশি প্রশংসাসূচক স্তূতি করতে।
৬ ষষ্ঠ ঘন্টায় সদাপ্রভুর প্রশংসা করে মেঘরাশি এবং মধ্যরাতের আতঙ্কেরা
৭ সপ্তম ঘন্টাটি স্থির হয়ে থাকা প্রবল শক্তিমান জলরাশির জন্য এবং এই সময়ে জল সেচন করা যায়। সদাপ্রভুর উপাসক এই জল পবিত্র তেলের সাথে মেশান ও সেই মিশ্রন তিনি পীড়িতের দেহে মালিশ করেন এবং তারা বিশ্রাম পায়
৮ অষ্টম ঘন্টায় পৃথিবীর বুক চিড়ে তৃণ আবির্ভূত হয় এবং স্বর্গ থেকে শিশিরবিন্দুরা নেমে আসে।
৯ নবম ঘন্টায় প্রশংসা করে চেরুবিম দেবদূতেরা
১০ দশম ঘন্টায় প্রশংসা করে মানবেরা তাদের সদাপ্রভূর। এসময় স্বর্গের দরজা খুলে যায় এবং যার মধ্যে দিয়ে সকল জীবিত প্রাণীদের প্রার্থনা স্বর্গে প্রবেশ করে। তারা উপাসনা করে করে এবং নিষ্ক্রান্ত হয়। এবং এ সময়েই সেরাফিম দেবদূত এবং মোরগেরা তাদের ডানা ঝাঁপটায়। এ সময়ে সদাপ্রভু মানুষকে তাই-ই সম্প্রদান করেন তারা যা প্রার্থনা করে।
১১ একাদশ ঘন্টায় সূর্য স্বর্গথেকে পুনরায় আত্নপ্রকাশ করে এবং সারা পৃথিবীতে সকল প্রানীদের আলচ্ছটায় উদ্ভাসিত করে।
১২ দ্বাদশ ঘন্টায়, অপেক্ষা হয় ধূপ এর পবিত্র ধোঁয়ার জন্য। তখন আগুন এবং বাতাসকে নীরব থাকতে দেখা যায় যতক্ষন না উপাসক স্বর্গের উদ্দেশ্যে ধূপ জ্বালান। এ সময় সকল স্বর্গীয় শক্তি সমূহ স্বর্গের পথে নিষ্ক্রান্ত হয়।

রাতের ঘন্টাগুলোর পরিসমাপ্তি ঘটে
  

Wednesday, April 8, 2020

সময়

সময়টা বড্ড অসময়! 
ক্ষুধা আর অনিশ্চয়তার এই সাম্রাজ্যে
ঘাপটি মেরে আছে চোরের দল।
আকাশে উড়ে বেড়ায় শকুনের পাল,
মৃত্যু তাড়া করে ফিরছে সবাইকে।
আতঙ্কে কাটা প্রতিটি মুহূর্ত, আর চোখে বেঁচে থাকার আকুতি নিয়ে
রাস্তায় ঘুরে ফিরছে জীবন্ত যীশুরা।

বলি দিতে হেঁটে নিয়ে আসা লক্ষাধিক শ্রমিক
কার্যত অপেক্ষা করছে তার অন্তিম সময়ের। 
তাদের লাশের অপেক্ষায় আছে তথাকথিত এলিট শ্রেণী,
তাদের হাড় দিয়ে তৈরি হবে মহল। 
উন্নয়ন স্বমেহনের চরম শিখরে উঠে বাধা প্রাপ্তির একটা সমাধান তো করতেই হতো।
যুগে যুগে বলিদানই তো সমাধান। 
আসুন আমরা আতশবাজি ফোটাই, হাতে তালি দিয়ে
উদযাপন করি আমাদের এই সাফল্য।