Thursday, April 22, 2021

প্রশস্তি

তার দু'চোখের গভীরতায় ডুবে গেছে মন,
সাঁতার না জানা এই আমার হৃদপিন্ড
থমকে গেছে অনেকক্ষণ।

আমার পৃথিবী থমকে গেছে,
আমি আটকে গেছি মায়ায়। 
আমি বিলীন হয়ে গেছি তার অস্তিত্বে, 
আমি বেঁচে আছি
অলীক কল্পনায়। 

Tuesday, April 20, 2021

সৃষ্টি


একাকীত্বের পরম সীমা অতিক্রম করে
নতুন মহাবিশ্ব গড়ে চলেছি একা হাতে।
পৃথিবী সেখানে নিকষ মেঘে ঢাকা, আর কালবোশেখির ঝড়ে পরিপূর্ণ।
সূর্যের আলোহীন পাথুরে ভুমিতে বসে প্রানহীন ধ্যানে
চলছে সৃষ্টির মন্ত্রপাঠ। 
আকাশের কান্নায় ভিজে চলেছি অবিরাম
চলছে সৃষ্টিকাজ, একদন্ড নেই বিশ্রাম। 

করছি একা,
সম্পুর্ন একা।
চারপাশে সব আছে, তবু কিছু নেই!

Monday, April 19, 2021

এপিটাফ


তাপঝরা দুপুরে ঝলসে যাওয়া চোখে 
ফাঁকা হয়ে যাওয়া রাজপথ দেখি। 
রাস্তা থেকে দূরে বসে থাকা স্বল্পবয়েসী এক মা'কে দেখি
ক্ষুধায় আর্তনাদরত শিশুর মাথায় হাত বুলিয়ে কাঁদতে। 
অনাথ সন্তানদের দেখি সফেদ পট্টবস্ত্র চাপিয়ে
ওস্তাদদের সমাপ্তি অযোগ্য চাহিদা মেটাতে ভিক্ষা করতে। 

রাস্তার কুকুরগুলোও কেমন নেতিয়ে পড়ছে প্রতিনিয়ত,
আশ্রয় নিয়েছে শহীদ মিনারের ছায়ায়।
আস্ফালকদের আস্ফালন অন্তর্জালের ছোঁয়ায়
বেজে চলেছে চা বিক্রেতার মুঠোফোনে;
সন্ধ্যায় ওতেই হবে গুটি বিক্রির হিসাব‌।‌‌

ব্যাকবেন্ঞ্চার মুফতে পাওয়া উর্দি গায়ে ধমকাচ্ছে
মুক্তিযোদ্ধা বাবার জন্য ওষুধ কিনতে বের হওয়া 
রিকশাচালক সেলিম কে। 

তাপঝরা দুপুরে ঝলসে যাওয়া চোখে 
আমি শুধু দেখি ঝাপসা হতে থাকা একটা রাষ্ট্রের কায়া,
যার এপিটাফ লিখে চলেছি আমরা সবাই। 

Thursday, April 15, 2021

সন্ধ্যা


এম্বুলেন্সের কর্কশ সাইরেনের শব্দ যখন শুনি
মনটা কেমন বিষাদে ভরে ওঠে। 

চারিদিকে কোলাহলের মাঝেও এক অযাচিত নিঃশব্দতা,
হাস্যোজ্বল যুবকের মুখের উপর এক কালো ছায়া। 
সদ্য স্বামীহারা বৌদি সন্তানকে নিয়ে ফিরছে বাবার বাড়ি,
এবার আর হাসিমুখে নয়। 

পরের ঘরে খেয়ে মেতে ওঠা ঘ্যোতঘ্যোত করা শুয়োরের
লেবাস পকেটে হেক্সিসলের বোতল। 

মৃত্যু পরম সত্য,
এর চেয়ে বড় সত্য নাই,
তারপরও ভীষণ আতঙ্কের চাদরে ঢাকা চারিদিকে। 

লাশের মিছিল শুরু হওয়ার আগের মুহূর্তে দাঁড়িয়ে,
সন্ধ্যার আবছা আঁধারটা আর রোমান্টিক লাগছেনা। 
শিরদাঁড়ায় বয়ে যাচ্ছে ভয়ের স্রোত।

শত বছর আগে আমার পূর্বপুরুষেরও কী এমন ‌হত? 

Wednesday, April 7, 2021

ইতিহাস


অস্পষ্ট শব্দগুলো থেকে তৈরি হয় 
অগ্নিঝরা সব বাক্যাংশ।
রক্তে আগুন ধরানো বাক্যেরা জোড়া লেগে
সৃষ্টি করে সব কালজয়ী ভাষা-
আর,
জমাট বাঁধা রক্তে তৈরি হয় ইতিহাস। 

ছেঁড়া ছবিগুলো জোঁড়া লাগিয়ে
যে ক্যানভাস হয় তার অর্থ পরিষ্কার।
আমরা ইতিহাসের সাক্ষী হতে যাচ্ছি,
যে ইতিহাস বদলাতে না পারার কারনে
ঘৃনিত হবো উত্তরপুরুষের কাছে। 

একদল উনমানুষের প্রাচীন খুলিতে 
মস্তিষ্ক বর্গা দেবার খেসারত দিতে হবে
যতদিন না আলোর দিশারীরা সংখ্যাধিক্য হয়।

সে দিন কী আর আসবে!