Sunday, June 30, 2013

সালাম-ই-‘পাগলা’ আশিক

সেমিনার কক্ষ... ছেলেপুলে সব এসে ভিড় করে রয়েছে এখানে। সবাই সিরিয়াস। পড়াশোনায় ব্যাস্ত। সামনে যে পরিক্ষা। ইফতিরও তাই আগমন সেমিনার এ। যদিও সে লাইব্রেরী। সেমিনার আর ক্লাসরুম শ্রদ্ধাভরে এড়িয়ে চলে ইফতি। পড়াশোনা সারা বছর না করলেও পরিক্ষার আগে সেও সিরিয়াস হয়ে যায়। তাকে যদি নোট বলে পত্রিকা কাটিং ধরিয়ে দেয়া হয় তাও সে সংগ্রহ করে আগ্রহভরে।
সেমিনারে সব বেঞ্চিই ফাঁকা। তবে এক বেঞ্চের কোনায় একজনের বসার মত জায়গা আছে। ইফতি গেল বেঞ্চ দখল করতে। রাজনীতির সাথে যুক্ত ইফতি ধরা কে সরা জ্ঞ্যান করে তবে সে এক জায়গায় অতি দুর্বল...
বেঞ্চে বসা সাকের। ইফতি ধমকে সাকেরকে বলল, ‘হারামজাদা সর, বসতে দে’। সাকের কিঞ্চিত মিন্মিনে গলায় বলল, ‘ভাই, এখানে তো আফরোজ বসছে। ঠিক আছে বস এখানে’। সাকের সরে জায়গা করে দেয় ইফতিকে।
ইফতি বসেনা বেঞ্চে। ‘না থাক, আফরোজা বসছে না? বসলে আবার ও রাগ করবে থাক’- ইফতি আশ্বস্ত করল সাকের কে। ইফতির হৃদয়ে ব্যান্ড বেজে ওঠে আফরোজার কথা শুনলে। জামাকাপড়, ব্যাগ, মোবাইল আর মেকাপ মিলে ২৫ কেজি ৭০০ গ্রাম ওজনের ভেটকি হাসি মারা মেয়েটাকে কেন যে ইফতির এতো পছন্দ তা নিয়ে বোধ হয় স্বয়ং ঈশ্বরও দ্বিধাগ্রস্ত। ইফতি দেখল টেবিলে একটা শীট রয়েছে তার উপরে নাম আফরোজার। আফরোজা ক্লাসের ফার্স্ট গার্ল। তাই সে আর লোভ সাম্লাতে পারলনা। সাকের কে বলল, ‘ওই, আফরোজা আসলে কইস ইফতি ভাই শীট নিছে। ফটোকপি কইরা আইনা দিব। ১০ মিনিটের মধ্যে’। ছুটে চলে গেল ইফতি শীট ফটোকপি করতে...
আধা ঘন্টা পর
আফরোজা আর ইফতি সামনা সামনি। বাঘও যে ভালবাসার সামনে বিড়ালে পরিনত হয় ইফতি কে দেখলে তার প্রমান হয়ে যাবে অবলীলায়। কাচু মাচু হয়ে দাঁড়িয়ে আছে আফরোজার সামনে। আফরোজা তাকে ঝাড়ছে ঝুল ঝাড়ার মত করে...
- তুমি শীট নিয়েছ কাকে বলে?
- ‘সা-আ-আ...কের কে বলে...ছি...লাম’ শুকিয়ে যাওয়া গলায় টেনে টেনে জবাব দিল ইফতি।
- শীট কার? সাকেরের না আমার? তোমার কত্ত বড় সাহস তুমি আমাকে না বলে আমার শীটে হাত দিয়েছ। ফাজিল। ইতর।
- আমি তো...
- চুউপ।
- লজ্জা নাই তোমার। আমার সামনে থেকে যাও। যত্তসব বেয়াদব ছেলে।
সেমিনারের সবাই হা করে তাকিয়ে দেখছে ইফতির এই বলাতকার হবার দৃশ্য। ইফতিও আর কথা না বাড়িয়ে চলে এল সেখান থেকে।
...

২ বছর পর...
আড্ডায় বসে আছে ইফতি আর রাসিদ এক কফি শপে
রাসিদ - ওই ইফতি, হুনছস আফরোজার বিয়া হইয়া গেছে।
ইফতি - বিমর্ষ ভাবে আকাশের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে ‘হুম’
- কিরে বে? মন খারাপ ওর লাইগা?
- আবারও ‘হুম’।
- কিরে শালা মাইয়া বিয়া কইরা এতক্ষনে টুট কি টুট কইরা ফালাইছে আর তুই শালা হুম হুম মারাচ্ছিস।
- হুম
-      ভাই কছম লাগে হুম হুম বাদ দিয়া কিছু ক।
-      কি কমু ক? খুব ভাল বাসতাম মাইয়াডারে। কইতেও পারলাম না। তার আগেই বিয়া হইয়া গেল।
-      দোস্ত, মন খারাপ করিসনা। ওই আফরোজা না তোকে সবার সামনে ঝাড়ছিল। এই কথা মনে করে ওরে ঘৃণা করার চেষ্টা কর। দেখবি ভুলে গেছিস।
-      না রে। ওই ঝাড়ি এতো সুন্দর ছিল এখনও আমার কানে বাজে। রাগলে ওরে অপরুপা লাগে রে। ওরে তো ভুইলা যামুই কোন না কোন একদিন। কিন্তু আপাতত ওরে ভালবাইসা কষ্ট পাইতে দে।

রাসিদ নির্বাক। চেয়ে রইল ইফতির দিকে। আর ভাবল ‘স্লা, ঝাড়িও রোমান্টিক হইতে পারে... যে এই পোলা সেই ঝাড়ির কথা মনে কইরা দুক্ষবিলাস করতেছে। আজিব ব্যাপার। এই কারনেই বোধ হয় কবি বলেছেন, পিরিতির আগুন এমনই আগুন  তাতে পুড়লেও ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা লাগে’।

Saturday, June 29, 2013

বাস্তবে নয়... আমার কল্পনায়

বৃষ্টির মাঝে কাকভেজা হয়ে যখন পীচঢালা রাস্তায় হাঁটি আমি,
পাশে থাক তুমি...
বাস্তবে নয়... আমার কল্পনায়। 

আমি হাসি তোমার হাসিতে, 
তোমার পানে চেয়ে থাকি অপলকে...
তোমার হাসির পানে...
ভালবাসি তোমায় চাই বলতে, বলেছিও অনেকবার।
বাস্তবে নয়... আমার কল্পনায়।

চোখের জল মিশে গেছে বৃষ্টিধারায়,
আলাদা করতে পারেনি কেউ, তুমি ছাড়া আর কেউ...
মুছে দিয়েছ শুধু তুমিই
বাস্তবে নয়... আমার কল্পনায়।

Friday, June 28, 2013

ভালবেসে যাব

ভালবাসি তোমায় আমি হয়নি কখনও বলা।
হয়তো বলব না কখনও...
জানি আমায় ভালবাসতে পারবেনা তুমি...
তাচ্ছিল্যভরে বার কয়েক আমায় বোঝাতে চেয়েছ
সম্ভব নয় তোমার পক্ষে আমায় ভালবাসা।

তাই বলে কি থেমে থাকবে আমার হৃদয়?
ভালবেসেছি যখন ভাল তো সে বেসেই যাবে তোমায়,
তুমি চাও বা না চাও...
একসময় হয়তো শেষ হয়ে যাব, চলে যাব অজানায়,
ভালবাসব তোমায় যতবার হবে ফিরে আসা।

প্রতি জন্ম, প্রতি মুহূর্ত ভালবেসে যাব তোমায়।
বিনিময়ে চাইনা কিছু তোমার কাছে, শুধু একচিলতে হাসি-
তোমার চিকন ঠোঁটে, আর চোখের মাঝে দুষ্টুমি।
এটা পেতেই ফিরে ফিরে আসব, ভালবাসব তোমায়,
বিলীন হব আমি সরিয়ে তোমার কুয়াশা।


Sunday, June 23, 2013

কিছু কিছু স্বপ্ন

কিছু কিছু স্বপ্ন হারিয়ে যায় শুরু হবার আগেই,
আর কিছু কিছু স্বপ্ন বারে বারে জানান দেয়
তার উপস্থিতির।
সেই স্বপ্ন গুলোর কারনেই তো বেচে থাকা
হাজার কষ্টের মাঝে।
আর সেই স্বপ্নের মাঝে থাক তুমি।
তোমার জন্যই স্বপ্ন মানেনা বাঁধ
কোন নিয়ম নীতির।

Saturday, June 22, 2013

আমার দুঃখ ভোলানো বন্ধুর তরে

সব খারাপের একটা ভাল দিক থাকে।
সেই ভালটা থাকে লুকিয়ে...
তাই হয়তো চোখে পড়েনা কারো সেভাবে...

তবে আমার তো  অনুসন্ধিৎসু মন,
জানি সমাজ আমায়  খারাপ বলবে- উত্তর তো দিতে হবে সমাজকে।
তাই গ্লাসের তলায় খুঁজে বের করলাম সুখ।
বোঝালাম মনটা সহ সবাইকে
দুঃখ চলে যায়, প্রশান্ত হয় মন
এই বন্ধুর প্রবল প্রভাবে।

কিন্তু এখানেই কি শেষ?
না, শেষ এখানেই নয়। এতো কেবল শুরু।
দুঃখ তো ফিরে ফিরে আসবে আমার সামনে।
বারে বার সে আমাএ মনে করিয়ে দেবে তার
দেওয়া কষ্টের কথা...
পারবনা তো সইতে, ফিরে ফিরে যাব তার কাছে,
যে হয়েছে আমার নতুন বন্ধু
পবিত্র ধুম্রের পর, আমার দুঃখ ভোলাতে।
বাচিয়ে রাখতে আমায়, যখন মরি প্রায় তার অভাবে।


বর্ষা, তুমি আর কদম ফুল

বর্ষার প্রথম দিনের প্রথম কদম টা তোমার হাতেই দিতে চেয়েছিলাম, 
ভেজা তনুতে অপরুপ লাগছিল তোমায়। 
হারিয়েছিলাম তোমাতে আগেই
আবার হারাতে মন চাচ্ছিল তোমার ওই রেশমি লালচে কেশের সাগরে।
তোমার চিকন ওষ্ঠের আঘাতে আমার মরদাঙ্গি ক্ষত বিক্ষত করতে চাচ্ছিল হৃদয়টা।

কোন এক সময় মনে হল আমার ভাবনা ভুল,
তোমার মাঝে নেই আমার আসল চাওয়া।
তুমি আর দশটা সাধারন মেয়ের মতই, তোমায় আমি ভেবেছিলাম অনন্য।
যখন বুঝতে পারলাম তুমি ক্ষণে ক্ষণে পাল্টাও তোমার রূপ,
তখন সিদ্ধান্ত নিলাম, নিজ হাতে হত্যা করব মধুর স্বপ্নটা।

তাই বর্ষার প্রথম কদম কে আর অপবিত্র করলাম না-
তোমার মত এক নারীর হাতে দিয়ে, ভুলের বোঝা আর বাড়ালাম না।
তোমাকে তোমার মত থাকতে দিয়ে, আমার জীবনটাকে ভুলের হাত থেকে বাচাতে
একা একা চলে এলাম সরোবরে, হাতের কদমটা ছুড়ে দিলাম জলে।
তুমি যেমন দূরে চলে গেছ, তেমনি স্রোতের টানে দূরে চলে যাচ্ছে কদমটা।

Thursday, June 20, 2013

অনুভূতি

হৃদয় যখন খোঁজে তোমায় 
আধার মাঝে, আনমনে...
ভালবেসে তোমায় পোড়ে নিজে।
আমি অথর্ব হয়ে দেখি চেয়ে চেয়ে,
কিচ্ছু পারিনা করতে।

আজ পর্যন্ত ধিক্কার এর পর ধিক্কার দিয়েছে
আমার হৃদয় আমাকেই।
আজ নিরুপায় হয়ে সেই পোড়া হৃদয়ে
ঢাললাম পবিত্র জল।
হৃদয় আমার সুস্থতার দ্বারপ্রান্তে।

Wednesday, June 12, 2013

বন্ধুত্বের অনুপাত


মেঘে ঢাকা আকাশ,
গম্ভীর স্বরে মাঝে মাঝে গর্জে ওঠে মেঘ।
ভেজা কালো পীচ ঢালা রাস্তায় পাশাপাশি হাঁটছি তুমি আর আমি।
মাঝে মাঝে মেঘের গর্জনে ভয় পাচ্ছ তুমি।
মুঠোর মাঝে শক্ত করে ধরে রেখেছ আমার হাত।

ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি,
তার মাঝে ভিজে ভিজে চলছি আমরা।
ভাবছি মনে মনে, সারাজীবন যদি কাটাতে পারতাম এভাবে,
সারাজীবন যদি পাশে থাকতে তুমি!
ভাঙল স্বপ্ন, প্রেমের চেয়ে যে বড় বন্ধুত্বের অনুপাত।

Friday, June 7, 2013

রয়ে যাও, অনন্য



বৃষ্টি এসেছিল এক চিলতে মেঘের  ডানায় চড়ে।
অপেক্ষা করেছিলাম তোমার জন্য-
তোমার প্রতিক্ষায় ভিজেছিলাম বৃষ্টিতে...
জানি কখনও না কখনও আমার সামনে আসবেই তুমি।
আসতেই হবে...
কারন সত্যিকারের ভালবাসা যে আমার তোমার জন্য

হৃদয়ে আমার প্রতিক্ষা শুধুই তোমার,
আমার ভাবনা জুড়ে শুধু তুমি...
সত্যি বলছি এ হৃদয়ে শুধু তুমিই।
কোন না কোন দিন এমনই বৃষ্টিতে ভেজা বিকেলে
দেখা হবে তোমার আমার। উষ্ণ হাত ধরে তোমার
বলব আমি, রয়ে যাও আমার কাছে, অনন্য।